দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পুনরায় বৃদ্ধি পাচ্ছে। গ্রস রিজার্ভ ২৫ বিলিয়ন ডলার এবং নিট রিজার্ভ প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের বৃদ্ধি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানোর প্রধান কারণ। ডলারের সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় আগস্ট থেকে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ বাড়ানো হয়েছে, যার ফলে ঋণের স্থিতি কমেছে। একই সঙ্গে আমদানিও বাড়তে শুরু করেছে, যা আমদানি বাণিজ্যে স্থবিরতা কাটাতে সহায়তা করছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০ দিনের ব্যবধানে দেশের নিট রিজার্ভ বেড়েছে ১২২ কোটি ডলার, এবং একই সময়ে গ্রস রিজার্ভ ৫০ কোটি ডলার বেড়েছে। রিজার্ভ থেকে বিভিন্ন তহবিলে বিনিয়োগ করা অর্থ তুলে এনে নিট রিজার্ভে যোগ করা হচ্ছে, যার ফলে নিট রিজার্ভ দ্রুত বাড়ছে।
২৮ নভেম্বরের শুরুতে গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৪৪৬ কোটি ডলার, যা ৩০ নভেম্বর বেড়ে ২৪৯৬ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। একই সময়ে নিট রিজার্ভ ১৮৭৪ কোটি ডলার থেকে বেড়ে ১৯৯৬ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক আশা করছে, ডিসেম্বরের মধ্যেই গ্রস রিজার্ভ ২৫ বিলিয়ন এবং নিট রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করবে। কারণ রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। রেমিট্যান্সের বিনিময় হার বৃদ্ধির ফলে প্রবাসীরা আরও বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন, পাশাপাশি রপ্তানি আয়ও বাড়ছে।
চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বরে রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি প্রায় ২৬.৫ শতাংশ, যেখানে গত অর্থবছরের একই সময়ে তা ছিল মাত্র ০.১৭ শতাংশ। জুলাই-অক্টোবর সময়ে রপ্তানি আয় ৮.৫ শতাংশ বেড়েছে, যেখানে আগের বছর এ সময়ে তা কমেছিল।
ডলারের সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় আমদানি ব্যয়ও বাড়ছে। গত অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে আমদানি ব্যয় কমলেও, চলতি অর্থবছরে তা ৩.১১ শতাংশ বেড়েছে। ব্যাংকগুলোয় এলসি খোলার প্রবণতাও বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত নভেম্বরে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দেনা বাবদ ১৫০ কোটি ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ কমে ১৮৪৬ কোটি ডলারে নেমে আসে। জানুয়ারিতে আবার নভেম্বর-ডিসেম্বরের আকুর দেনা পরিশোধ করতে হবে, যা রিজার্ভে সাময়িক প্রভাব ফেলবে।
তবে বর্তমান সরকারের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের পর রিজার্ভ পুনরায় বেড়ে আগের অবস্থানে চলে আসছে, যা আগে সম্ভব হতো না। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এর মূল কারণ হচ্ছে দেশে টাকা পাচার অনেকাংশে কমে গেছে, ফলে রিজার্ভ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
Leave a Reply