আজ ২১ ডিসেম্বর, নাটোর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে নাটোরের মানুষ বিজয়ের স্বাদ পায় ১৬ ডিসেম্বরের চার দিন পর। যদিও মুক্তিযুদ্ধের সময় এই জেলায় বড় কোনো লড়াই হয়নি, তবুও বিভিন্ন স্থানে চালানো হয়েছিল ভয়াবহ গণহত্যা।
মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস জুড়ে পাক হানাদার বাহিনী এবং তাদের সহযোগী রাজাকার-আলবদররা নাটোরের সদর উপজেলার ছাতনী, দত্তপাড়া, মোহনপুর, লালবাজার, কাপুড়িয়াপট্টি, শুকলপট্টি, মল্লিকহাটি, বড়াইগ্রামের বনপাড়া ক্যাথলিক মিশন, গুরুদাসপুরের নাড়িবাড়ী, সিংড়ার হাতিয়ানদহ, কলম এবং লালপুর উপজেলার গোপালপুরের নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল চত্বরে গণহত্যা চালায়।
দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য স্থান মুক্ত হলেও নাটোর মুক্ত হয় ২১ ডিসেম্বর। সেদিন তৎকালীন গভর্নর হাউস, বর্তমান উত্তরা গণভবনে, মিত্রবাহিনীর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার রঘুবীর সিং পান্নুর কাছে পাক সেনা গ্যারিসনের টু আইসি ব্রিগেডিয়ার নওয়াব আহমেদ আশরাফের নেতৃত্বে প্রায় সাড়ে সাত হাজার পাক সেনা অফিসার, জেসিও ও মিলিশিয়াসহ আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নাটোর সেনা গ্যারিসনের কমান্ডেন্ট মেজর জেনারেল নজর হোসেন শাহ এবং ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের কমান্ডেন্ট লে. জেনারেল লছমন সিং।
আত্মসমর্পণের পর পাক সেনাদের ট্যাংক, কামানসহ প্রায় ১১ হাজার অস্ত্র মিত্রবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। আত্মসমর্পণের খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিকেলে সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে বিজয়ের আনন্দে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে এবং পুরো শহর উল্লাসে মেতে ওঠে।
Leave a Reply